আকাশের ইচ্ছা

মোহাইমেন আফসারী রুম্মানঃ ছেলেটির নাম আকাশ (১১)। নিজের পুরো  নামটাও ঠিক মতোন জানে না সে। মায়ের নাম জিজ্ঞাসা করতেই তার ভাবনার বাতি ব্জলে উঠলো। বেশ একটু ভেবে বলল মায়ের নাম রুকসানা। বাবার নাম সে জানেনা। তার বর্তমান ঠিকানা বাগেরহাট নাগের
বাজারের বসতিতে। ভাগ্য তাকে এখানে টেনে এনেছে। তার মূল ঠিকানা পিরোজপুর জেলার একটি গ্রামে। বাগেরহাট চলে আসার কারণটা ঠিকমতো মনে আছে তার। ছেলেটির বাবা ছিল মানসিক ভাবে অসুস্থ। তাকে এবং তার মাকে প্রতিদিনই মারধোর করতো তার বাবা। সেই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে সে ও তার মা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে চলে আসে তাদের আনিশ্চিত ঠিকানার উদ্দেশ্যে। ছেলেটির মা বাড়িতে বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে। ছেলেটি ২য় শ্রেণী পর্যন্ত পড়েই তার পড়াশুনার পাঠ চুকিয়ে দিয়েছে।

এখন সে কাজ করে একটি চায়ের দোকানে। নির্দৃষ্ট কোন আয় নেই তার। সেই চায়ের দোকানের মালিকের কাছ থেকে জানতে পেরেছি তার বেতন প্রতিদিন দিয়ে দেওয়া হয়। ৫০ থেকে ৬০ টাকা এই তার প্রতিদিনের আয়, আর সামান্য কিছু নাস্তা দেওয়া হয় সকাল-সন্ধ্যা। সকাল ৭ টায়  দোকানে আসতে হয় আর দুপুর ৩ টা পর্যন্ত থাকতে হয়। আবার বিকাল ৫ টার আগেই দোকানে চলে আসতে হয় তাকে আর রাত ৯ টা পর্যন্ত কাজ করতে হয়। অন্য শিশুর থেকে তার জীবন পুরোটাই ভিন্ন।

কিন্তু এই ছেলেটির আমাদের কাছে একটি চাওয়া আছে। সে চায় আমরা যেন তার একটি ছবি তুলে ফেসবুকে আপলোড দেই। সে আরও বলে তার ছবি টায় কয়টা লাইক আসে তা তাকে জানাতে।

তার কাছে আমার প্রশ্ন ছিল তোমার পড়াশুনা করতে ইচ্ছা করে না? তার উত্তর ছিল “না”। সে আরও বলে, “একবার তার মা তাকে স্কুলে নিয়ে গিয়েছিল, কিন্তু স্কুলে তাকে যে শ্রেণীতে ভর্তি করা হয়েছিল সেখানে তার থেকে বয়সে সবাই অনেক ছোট”।