আমার বন্ধু জুয়েল

আসিফা রশিদ (পিরোজপুর) : চাহিদা বঞ্চিত শিশু জুয়েল। জুয়েলের বয়স ১০ বছর। সে পিরোজপুর জেলার নামাজপুরে তার  পরিবারের সাথে বসবাস করে। জুয়েলরা দুই বোন এবং দুই ভাই। জুয়েল তার বাবা মায়ের দ্বিতীয় সন্তান। তার বাবা দিনমজুরের কাজ করে আর মা গৃহিণী। তার দুই বোন পড়াশুনা করে। কিন্তু জুয়েলের বাবার সামান্য উপার্জনে বড় সংসার ভাল ভাবে চলে না। জুয়েল পড়াশুনা করতে চাই কিন্তু তার পরিবারের অভাবের কারণে সে পড়াশুনা করতে পারে না। তার বাবা মা সংসারের খরচ চালানোর জন্য তাকে ইট ভাঙার কাজ করতে বাধ্য করে। তার যে বয়সটা পড়াশুনা করার, সে সেই বয়সটায় ইট ভাঙার মত কষ্টকর কাজ করে। সে সারাদিন রাস্তার পাশে বসে ইট ভাঙে। এত অল্প বয়সে সারাদিন ঘাম ঝরা পরিশ্রম করে সে প্রতিদিন ২০০ টাকা পায়, তা দিয়ে সংসারের খরচ চালায়। জুয়েলের বয়স এখন মাএ ১০ বছর। তার এখন ইট ভাঙার মত কঠোর পরিশ্রম করার বয়স না। তারও অন্য শিশুদের মত অনেক চাহিদা রয়েছে। কিন্তু, সে তার পরিবারের দারিদ্রতার কারনে তার চাহিদা পূরন করতে পারছে না।

বাদাম বেইচা কেমনে স্যার হমু

গরীব বা ধনী হোক সবারই স্বপ্ন আছে। স্বপ্ন কখন জাতি ভেদে হয় না। স্বপ্ন দেখার অধিকার সবার আছে।যে বয়সে লেখাপড়া করার কথা ঠিক সেই বয়সে অনেক শিশু তার পরিবারের জীবিকা নির্বাহের জন্য বিভিন্ন শ্রমে নিয়োজিত থাকে।শ্রম যে ধরনের হোক না কেনো চায় শুধু দুবেলা দুমুঠো ভাত।শিশুটির নাম উজ্বল (১০)বেউথা বস্তিতে  থাকে দুর থেকে তার কন্ঠে শোনা য়ায “বাদাম লইবেন ভাই বাদাম “তাকে এ কাজ কর কেন প্রশ্ন করলে জানায় “বাবা নাই মা বাইততে বাইততে কাম করে।  মা যা কামায় তাতে আমাগো অই না তাই বাদাম বেচি “।সে আরো জানায় প্রতিদিন তার (১৫০-১৮০) পর্যন্ত আয় হয়।তার স্বপ্নের কথা জানতে চাইলে সে বলে “ইচ্ছা ছিল স্যার হমু  পোলাপানে আমারে সালাম দিব।এহন আর স্কুলে জাইতে পারি না। বাদাম বেচুম না স্কুলে যামু।”
আমাদের সমাজে অনেক শিশু আছে যারা লেখাপড়া করতে চায়। কিন্ত আর্থিক অভাবের কারনে তাদের স্বপ্ন শুধুই স্বপ্নই রয়ে যায়।

শিশু সাংবাদিক
আবুল হাসানাত
NCTF জেলা কমিটি মানিকগঞ্জ

Every Last Child Story

Raahin Sheikh

My name is Raahin sheikh, I am 14 years old. I live with my mother, an elder brother and a younger sister. I live in Raipur village under Meherpur district. I support my family through earning money and also help my mother in her domestic works. When I was in grade-3 at my school then my father died; and I had to discontinue my study due to abject poverty of my family. Now I am working in a motorcycle garage. Today, when I was going to my working station feeling very sad in seeing my friends who were going to ss been interested to study but no way and chool. If I could go to school again and play with my friends that makes me very happy. I had always till I miss school. I wanted to be a police officer after completing of my study. Now I want to be a renowned motorcycle mechanic but I am worried if I still can do it.

আকাশের ইচ্ছা

মোহাইমেন আফসারী রুম্মানঃ ছেলেটির নাম আকাশ (১১)। নিজের পুরো  নামটাও ঠিক মতোন জানে না সে। মায়ের নাম জিজ্ঞাসা করতেই তার ভাবনার বাতি ব্জলে উঠলো। বেশ একটু ভেবে বলল মায়ের নাম রুকসানা। বাবার নাম সে জানেনা। তার বর্তমান ঠিকানা বাগেরহাট নাগের
বাজারের বসতিতে। ভাগ্য তাকে এখানে টেনে এনেছে। তার মূল ঠিকানা পিরোজপুর জেলার একটি গ্রামে। বাগেরহাট চলে আসার কারণটা ঠিকমতো মনে আছে তার। ছেলেটির বাবা ছিল মানসিক ভাবে অসুস্থ। তাকে এবং তার মাকে প্রতিদিনই মারধোর করতো তার বাবা। সেই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে সে ও তার মা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে চলে আসে তাদের আনিশ্চিত ঠিকানার উদ্দেশ্যে। ছেলেটির মা বাড়িতে বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে। ছেলেটি ২য় শ্রেণী পর্যন্ত পড়েই তার পড়াশুনার পাঠ চুকিয়ে দিয়েছে।

এখন সে কাজ করে একটি চায়ের দোকানে। নির্দৃষ্ট কোন আয় নেই তার। সেই চায়ের দোকানের মালিকের কাছ থেকে জানতে পেরেছি তার বেতন প্রতিদিন দিয়ে দেওয়া হয়। ৫০ থেকে ৬০ টাকা এই তার প্রতিদিনের আয়, আর সামান্য কিছু নাস্তা দেওয়া হয় সকাল-সন্ধ্যা। সকাল ৭ টায়  দোকানে আসতে হয় আর দুপুর ৩ টা পর্যন্ত থাকতে হয়। আবার বিকাল ৫ টার আগেই দোকানে চলে আসতে হয় তাকে আর রাত ৯ টা পর্যন্ত কাজ করতে হয়। অন্য শিশুর থেকে তার জীবন পুরোটাই ভিন্ন।

কিন্তু এই ছেলেটির আমাদের কাছে একটি চাওয়া আছে। সে চায় আমরা যেন তার একটি ছবি তুলে ফেসবুকে আপলোড দেই। সে আরও বলে তার ছবি টায় কয়টা লাইক আসে তা তাকে জানাতে।

তার কাছে আমার প্রশ্ন ছিল তোমার পড়াশুনা করতে ইচ্ছা করে না? তার উত্তর ছিল “না”। সে আরও বলে, “একবার তার মা তাকে স্কুলে নিয়ে গিয়েছিল, কিন্তু স্কুলে তাকে যে শ্রেণীতে ভর্তি করা হয়েছিল সেখানে তার থেকে বয়সে সবাই অনেক ছোট”।

নীলফামারীর প্রত্যন্ত অঞ্চলের কেশবের অসাধ্য সাধন

আঠারো বছর বয়সের দুর্দান্ত সাহসের কথা বলেছেন কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য। সে কথা প্রমাণ করতেই যেন অসাধ্য সাধন করেছে নীলফামারীর আঠারো বছর বয়সী কিশোর কেশব রায়। শত বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে এগিয়ে যাওয়ার অদম্য ইচ্ছা থাকলে কোনো কিছুই সাফল্যকে ঠেকিয়ে রাখতে পারে না তার একটি উজ্জ্বল উদাহরণ কেশব রায়।

শিক্ষাক্ষেত্রে অবদানের জন্য জাতিসংঘের ‘ইয়ুথ কারেজ অ্যাওয়ার্ড ফর এডুকেশন’-ভূষিত হয়েছেন নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার বিন্যাকুড়ী গ্রামের কেশব রায়। প্রত্যন্ত গ্রামের অভাবী এই কিশোর নিজের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি এলাকার ঝরেপড়া শিক্ষার্থীদেরও করেছেন স্কুলমুখী। জলঢাকার শিশু ফোরামের সভাপতি কেশব রায় এলাকায় সফল শিশু সংগঠক হিসেবে পরিচিত। ২০০৮ সাল থেকে তিনি বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, সার্বিক স্যানিটেশন, গুণগত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে আসছেন। ২০১২ সালে শ্রীলঙ্কা এবং চলতি বছর থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত শিশু সমাবেশে তিনি বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন।

এছাড়া তিনি অবদান রেখেছেন বাল্যবিবাহ বন্ধে। মাত্র ১৮ বছর বয়সেই কলেজে লেখাপড়ার পাশাপাশি সামাজিক কাজ করে আসছেন। অভিনয়, গান ও নাটকের মাধ্যমে তিনি মানুষকে সচেতন করার কাজটি করে আসছেন কয়েক বছর ধরে। এসব কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি পেয়েছেন জাতিসংঘের ‘ইয়ুথ কারেজ অ্যাওয়ার্ড ফর এডুকেশন’। গত ১২ জুলাই,২০১৩’তে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ ভবনে মালালা দিবসে বিশেষ কর্মসূচিতে তার এ পুরস্কার জাতিসংঘের শিক্ষাবিষয়ক দূত ও সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন তুলে দেন প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল ইউএসএ প্রতিনিধির হাতে।অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন। ওইদিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অবস্থিত জাতিসংঘ সদর দফতরে মালালার পাশাপাশি সম্মানিত করা হয় বিশ্বের নানা প্রান্তের আরও সাত শিশুকে। এই সাত শিশুর মধ্যে বাংলাদেশি কেশব রায় স্থান করে নিয়েছেন। সম্মাননা পাওয়া অন্য ছয় শিশুর মধ্যে ভারতের দুজন এবং নেপাল, পাকিস্তান, মরক্কো ও সিয়েরালিয়নের একজন করে রয়েছেন। কেশবের বাড়ি নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার কৈমারী ইউনিয়নের বিন্যাকুড়ী গ্রামে। দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি বড়। তারা দুজনই এখন শিক্ষার্থী।বাবা দিনমজুরি এবং নিজের ভিটেসহ এক বিঘার মতো যে জমি আছে সেটুকুই তিনি চাষাবাদ করেন। সেখান থেকে জোগান দেন দুই সন্তানের পড়ার খরচ। মা গৃহিণী রঞ্জিতা রানী রায়। টাকা-পয়সার অভাবে দু-একবার কেশবের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়। বাধ্য তিনি অন্যত্র কাজ নেন। সপ্তম শ্রেণীতে ওঠার পর কেশবের বাবার পক্ষে লেখাপড়ার খরচ বহন করা অসম্ভব হয়ে ওঠে। সে সময় কেশব লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে তার স্কুলের পাশে একটি ভাঙাড়ি দোকানে কাজ নেন। এতে তার মাসে আসে ৩০০ টাকা। কিন্তু কেশব পড়াশোনা ছেড়ে মানসিকভাবে ভীষণ ভেঙে পড়েন। তার মন পড়ে থাকে স্কুলে। তার দোকানের পাশ দিয়ে যখন অন্য শিক্ষার্থীরা স্কুলে যায় তখন তিনি আনমনা হয়ে পড়েন। ওই দোকানের কাজে তিনি আর মন বসাতে পারেন না।

কাজ ঠিকমতো না করায় একবার তার কিছু বেতনও কেটে নেওয়া হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি আর লেখাপড়া ছেড়ে বেশি দিন থাকতে পারেননি। আবার টাকা জোগাড় করে স্কুলে ভর্তি হন। এ জন্য তিনি মাঝেমধ্যে প্রাইভেটও পড়াতেন। আরও একবার স্বল্পসময়ের জন্য তার লেখাপড়ায় ছেদ পড়েছিল। এভাবেই অনেক চড়াই- উৎরাইয়ের পর কেশব এখন স্কুল গণ্ডি পেরিয়ে কলেজে পা দিয়েছেন। তার ইচ্ছা লেখাপড়া শিখে মানবসমাজ উন্নয়নে কাজ করবেন। তার মতে, একজন  মানুষকে সচেতন করতে পারলে আর তার অভাব থাকবে না। তার মতো করে সে তার সমস্যা সমাধান করে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাবে।

কেশব একে একে বেশ কয়েকজনের বাসায় গিয়ে ঝরেপড়া শিশুদের স্কুলে ভর্তি করেন। বাড়ির পাশে রিকশাভ্যান চালক বাগান চন্দ্রের ছেলে প্রদেশ চন্দ্র ও দিনমজুর সুরিশ চন্দ্র রায়ের ছেলে বিধান চন্দ্র রায়ের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়। তিনি ওই দুই ছাত্রের বাবা ও মাকে বুঝিয়ে পুনরায় স্কুলে ভর্তি করেন। তারা এখন একটি উন্নয়ন সংস্থা পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করছে। একইভাবে কেশব লেখাপড়ার ফাঁকে শিশু ফোরামের মাধ্যমে বাল্যবিবাহ বন্ধের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি ওই এলাকার এখন পর্যন্ত ২৫ শিশুর বাল্যবিবাহ বন্ধসহ অর্ধশত ঝরেপড়া শিশুকে স্কুলমুখী করে তুলেছেন। স্থানীয় সমস্যাভিত্তিক নাটক লিখে তা মঞ্চায়ন করছেন তিনি। উদ্দেশ্য, মানুষকে সচেতন করা।
বর্তমানে তিনি কাজ করছেন বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ ও ঝরেপড়া রোধের পাশাপাশি স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ব্যবহার, জন্মনিবন্ধন, গুণগত প্রাথমিক শিক্ষা, গর্ভকালীন চেকআপ ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সন্তান প্রসবকরণে। সমাজ সচেতনতায় সাহসী ভূমিকা রাখা এবং নিজেকে আরও সমৃদ্ধ করতে অভিজ্ঞতা আদান-প্রদানের উদ্দেশে এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশ সফর করেছেন কেশব। তার গল্প মুখে মুখে ছড়িয়ে গেছে, নিজ এলাকায় বাল্যবিবাহ বন্ধে সচেতনতা সৃষ্টি এবং ঝরেপড়া শিশুদের স্কুলগামী করার ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখায়। কেশবকে অনেকে উল্লেখ করেছেন ‘বিশ্বের যুবসমাজের নেতা’ ও ‘রোল মডেল’ হিসেবে। অথচ তার এগিয়ে আসার পথ সুগম ছিল না। প্রতিকূলতার মধ্যে লেখাপড়ার পাশাপাশি কেশব নিজেকে জড়িয়ে নেন সমাজসেবামূলক কাজে। লেখাপড়ার পাশাপাশি সাংগঠনিক কাজে যুক্ত হয়ে তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন নিজেকে।

শিশুঅধিকার,বাল্যবিবাহ, ঝরেপড়া শিশুদের স্কুলে ফেরানো, স্যানিটেশন, যৌতুকসহ নানা বিষয়ে গণসচেতনতা সৃষ্টির কাজে তিনি অনন্য। কেশবের এমন কর্মতৎপরতা নজর কাড়ে সবার। উপজেলার কৈমারী ইউনিয়নে কেশব চন্দ্র রায়ের গ্রামভিত্তিক ১০টি দল আছে। এলাকার শিশু-কিশোররাই এর সক্রিয় সদস্য। বাল্যবিবাহের খবর পেলেই তারা ছুটে যান বিয়ে বন্ধ করতে। সামাজিক কাজ করতে গিয়ে প্রায় সব ক্ষেত্রেই বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে তাকে। কাজ করতে গিয়ে কেশব বুঝতে পারেন, সামাজিক ব্যাধি দূর করতে হলে সবার আগে গ্রামের মানুষকে সচেতন করতে হবে।কাজটি করতে সমর্থ হয়েছেন তিনি। যুবসমাজের নেতা ও রোল মডেল হিসেবে তার আন্তর্জাতিক সম্মাননা বাংলাদেশের জন্য বিরল গৌরব বয়ে এনেছে। বহু তরুণ- তরুণীদের স্বপ্ন দেখানো শিখিয়ে চলা এই তরুণ নিজেকেই যেন ছাড়িয়ে যাচ্ছেন। তার পথচলায় এখন সঙ্গীদের বাড়ানো হাতে হাত রেখে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মন্ত্রই যেন পড়ছেন সবাই। তার এগিয়ে যাওয়া অনুপ্রাণিত করছে অনেককে। বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে জীবনের সঙ্গে সংগ্রাম করে এগিয়ে যাওয়ার সব রকম পথেই হেঁটেছেন কেশব রায়।

এ.টি.ফয়সাল রাব্বি রাকিব
শিশু সাংবাদিক
এনসিটিএফ, নীলফামারী ।

আমার স্কুল জীবন

 

জীবনের  একটা   অধ্যায়ের প্রায় শেষ প্রান্তে এসে পৌঁছেছি । তারপরও নিজেকে প্রশ্ন করি কোথায় পৌঁছেছি আমি! কি আমার পরিচয় ? সে কারনেই কিছুটা স্মৃতি চারণ

মীরপুরের “লিটল ফ্লাওয়ার”নামক প্রতিষ্ঠানে ১/২ কেজি শ্রেনীতে ভর্তির মাধ্যমে আমার স্কুল জীবনের শুভ সুচনা ঘটে । এই স্কুলেই দ্বিতীয় শ্রেণী পর্যন্ত আমার ঠাই হয় । বাবার সরকারী চাকরী, হটাৎ একদিন সন্ধ্যে বেলা জানতে পারলাম খুব শীঘ্রই আমরা ঢাকা ত্যাগ করে রাজশাহী চলে যাব । তখনো বন্ধু চিনতে শিখিনি। নতুন বাসস্থানে যাওয়ার আনন্দে ২দিন ঠিকমত ঘুম হলনা । আমার রাজশাহী জীবন ছমাস পার হয়ে গেলো। পড়াশোনা খেলাধুলা সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিলো শুধু উত্তরের আবহাওয়া ছিল মারাত্মক বৈরি । থাকা হলোনা রাজশাহী এবার রওনা হলাম খুলনার দিকে।  ছমাস কিভাবে কেটে গেলো টের পেলাম না, সামনে তৃতীয় শ্রেণীর বিশাল  এক ভর্তি পরীক্ষা ! যেকরেই হোক ভাল স্কুলে ভর্তি হতেই হবে।

প্রথম পরীক্ষা “খুলনা পাবলিক কলেজ ” এর । প্রথম দেখাতেই প্রেমে পড়ে গেলাম এই স্কুলের , পরিক্ষার আগের রাতে স্বপ্নও দেখে ফেললাম এবং আল্লাহ্‌র অশেষ রহমতে ভরতিও হয়ে গেলাম এখানেই । স্কুল জীবনের প্রাতিষ্ঠানিক অধ্যায়ের শুরু মূলত এখানেই, এখন আমি বন্ধু চিনতে শিখেছি , চিনতে শিখেছি নিজের পরিচয় । পাবলিক কলেজের কত আনন্দ কত ভালবাসা বন্ধুত্তের সম্পর্ক সব বুকে চেপে রেখে দুফটা চোখের জল সঙ্গী করে আবার রওনা হই ঢাকায়। “শেরে বাংলা নগর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়” হয় আমার নতুন পরিচয় । সামান্য দিনের পরিচয়ে , নতুন পরিবেশে  কিছু নতুন স্বপ্ন ,কিছু নতুন বন্ধু সব আবার মোটামুটি স্বাভাবিক হয়েছিল । থাকা হলনা ঢাকায় আবার প্রত্যাবর্তন চিরচেনা খুলনায়, কিন্তু এবার আর আমি ভেঙ্গে পড়িনি । পরিবেশ পাল্টাতে পাল্টাতে মনটা পাথরের মতো শক্ত হয়ে গেছিলো, নতুন পরিবেশ আমাকে একটুও ভীত করতে পারেনি। পুরনো বন্ধুদের ফিরে পেলাম কিন্তু ফিরে পেলাম না প্রিয় প্রতিষ্ঠান। “খুলনা পাবলিক কলেজের” শ্রধ্যিও প্রিন্সিপাল মহোদয় আমাকে ভরতি নিতে অস্বীকার জানালেন । বাধ্য হয়ে আমাকে “খুলনা জিলা স্কুল” ভর্তি হতে হল। পরগাছার মতো হাজির হলাম জিলা স্কুলের মেধাবী ছাত্রদের মাঝে । হয়তো এটিই আমার শেষ স্কুল। জেলা স্কুলের মেধাবী ছাত্রদের মাঝ থেকে আমিও ২০১৬ সালের এস,এস,সি  পরীক্ষার্থী।

কিন্তু খারাপ লাগার চেয়ে আনন্দের বিষয় এপর্যন্ত যেকটি পরিবেশে  আমি মিশেছি, আমি মিশেই আছি । সবাই আমার বন্ধু । সুখে দুঃখে যাকেই কাছে চেয়েছি তাকেই পেয়েছি । এই অপদার্থকে কেউ পর করে দেয়নি।  এক সময় খুব কষ্ট হত একটি স্কুলে পুরোটা স্কুল জীবন পার করতে না পারায়। কিন্তু এখন ভেবে গর্ব হয়আমি খুলনা পাবলিক কলেজের ছাত্র। আমি শেরে বাংলা নগর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র। আমি খুলনা জিলাস্কুলের ছাত্র।

আহনাফ রাহাত ইপ্তি

খুলনা

Dream of a Chang-maker

Sojib Khondoker age 23, a change maker nurturing a dream in mind that “One day he might be the president of United Nation”. In 2004, when he was in grade six, helped one of his friends by providing a school uniform.This initiative encouraged him to engage in social work.

His journey started as a children representative with the support of save the children Australia through participating National Children Assembly, he learnt different subjects specially child rights and how to claim for that. In addition he also learnt to develop skill on drawing, reciting, acting and leadership

Even after admitted in university, he carried the dream of his child life. Following the dream he was engaged as youth member with national children’s task force, the largest national level children network in Bangladesh. Then he started promoting child rights issues in his district through supporting children’s actions. he developed number of reports as a child journalist in Daily Sotto Sonbad (newspaper) to raise mass awareness of different stakeholder. Second position in ‘Mina Media Award Printing Report Under -18’ was one of the best recognition of his work.

Beside he received training on journalism in Bangkok as a young journalist and worked as a speaker of FPAB’S as a youth journalist association. Now his dream to become a journalist of British Broadcast Center (BBC).

Moreover he is planning to develop a skill youth group who will also work for children. Sajib added “NCTF has a great contribution in all over my learning, good work and achievements.”


একজন স্বপ্নের ফেরিওয়ালা সজীব খন্দকার

সজীবের স্বপ্ন : বাংলাদেশের কোন ব্যক্তি হয়তো বা একদিন জাতিসংঘের মহাসচিব হিসাবে দায়িত্ব পালন করবে।২০০৪ সালের ঘটনা, ৬ষ্ঠ শ্রেনিতে পড়ুয়া ছেলেটি, প্রতিদিনের মতো স্কুলে গিয়ে, শুনতে পেল তার প্রিয় বন্ধুটিকে ক্লাস থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে কারণ, স্কুল ড্রেস না পরে আসা। ঘটনাটি শুনে খুবই মন খারাপ হলো ছোট্ট ছেলেটির। ছেলেটির প্রিয় বন্ধুটি স্কুল ড্রেস কিনতে পারেনি বলেই এই অবস্থা। আসলে বন্ধুটির বাবা সামান্য দিনমুজুর। তাই তিনি ছেলেটিকে স্কুল ড্রেস কিনে দিতে পারেননি। তবুও একটা উপায় তো বের করতে হবে, যেমন  চিন্তা তেমনি কাজ, অনেক ভেবে চিন্তে উপায় একটা বের হলো। নিজের মাটির ব্যাংকে জমানোর টাকা দিয়ে বন্ধুটিকে স্কুল ড্রেস কিনে সহযোগিতা করলো ছেলেটি যা ছিল নিজের টিফিনের টাকা থেকে বাঁচানো। ছোটবেলা থেকেই  অসহায় ও গরীব শিশুদের  জন্য কাজ করার অধীর আগ্রহ ছিলো এই ছেলেটির ।

এর পরে ঘটনা একটু অন্য রকম, ২০০৪ সালে, সেভ দ্য চিলড্রেন অস্ট্রেলিয়ার আয়োজনে বরিশাল জেলার শিশু প্রতিনিধি হিসেবে জাতীয় শিশু সমাবেশে অংশগ্রহণ করে ছেলেটি যেখানে উপস্থিত ছিল সারা দেশের প্রায় ৮০০ শিশু। জীবনে প্রথম ঢাকা আসার অভিজ্ঞতা। শিশুদের নিয়ে কাজ করা, তাদের অধিকারের কথাগুলো বলায় আগ্রহী, আবৃত্তি, ছবি আঁকা, একক অভিনয়, বিতর্ক, বাংলা পঠন, রচনা প্রতিযোগিতা ও শিশু নেতা হিসাবে পরিচিত ছেলেটির নাম মোঃ সজীব খন্দকার (জুনায়েদ)। সবাই তাকে সজীব নামেই ডাকে। উচ্চ মাধ্যমিকে মানবিক বিভাগে ৪.৮০ পেয়ে ২০১১ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয় সে। বর্তমানে বরিশাল ব্রজমোহন বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ৩য় বর্ষে পড়াশুনা করছে এবং শিক্ষা ও সাহিত্য সম্পাদক হিসাবে কাজ করছে, বিশ্বদ্যিালয়ের জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন এ। ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় বিকল্প শিশু চিন্তা সংগঠনের মাধ্যমে শিশুদের জন্য কাজ করা শুরু করে সজীব। বরিশালের শিশুদের অধিকার উন্নয়নে কাজ করতে ভালো লাগতো তার, এই সময়েই তিনি দুইজন গরীব ও অসহায় শিশুকে পড়াশুনা করানোর দায়িত্ব নেন। এরপর শুরু হলো তার পথচলা, ২০০৬ সালে বরিশাল জেলার ন্যাশনাল চিলড্রেন’স টাস্ক ফোর্স (এনসিটিএফ) বরিশাল জেলা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ, পরবর্তী পর্যায়ে ২০০৮ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত সারা বাংলাদেশে এনসিটিএফ কেন্দ্রীয় কমিটিরও সভাপতির  দায়িত্ব পালন করেন।

ম্যাস লাইন মিডিয়া সেন্টার (এমএমসি) এর মাধ্যমে সাংবাদিকতার দিকে প্রথম অগ্রযাত্রা হয় তার। । পরবর্তীতে এনসিটিএফ এর সদস্য হিসাবে সেভ দ্য চিলড্রেন ও প্রেস ইনস্টিটিউট মাধ্যমে শিশু সাংবাদিকতা প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর থেকে সাংবাদিকতার প্রতি ঝুঁকে বশে সজীব। শিশু সাংবাদিক হিসাবে শুরু হয় তার কর্মকান্ড সে এনসিটিএফ ত্রৈমাসিক মুখপত্র ‘শিশু বুলি’তে লেখা শুরু করে পরবর্তী পর্যায়ে বরিশালের ‘দৈনিক সত্য’ সংবাদের সম্পাদক মীর মনিরুজ্জামান শিশুদের নিয়ে লেখালেখির দায়িত্ব দেয় তাকে। ফলশ্রুতিতে সজীব ২০০৯ সালে ইউনিসেফ কর্তৃক আয়োজিত মিনা মিডিয়া এ্যাওয়ার্ড প্রিন্টিং প্রতিবেদনে ১৮ নীচে ক্যাটাগরিতে সারা বাংলাদেশে থেকে ২য় স্থানে দখল করে নেয়। ঢাকায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নগদ ২৫,০০০/- (পঁচিশ হাজার টাকা) ও ক্রেস্ট তুলে দেয় ইউনিসেফ’র বাংলাদেশের প্রধান তার হাতে। শিশু অধিকার লঙ্ঘন, নির্যাতনের কথা সবই সজীব তার লেখনীর মাধ্যমে তুলে আনার চেষ্টা করে।

বর্তমানে দৈনিক সত্য সংবাদের সাংবাদিক, ন্যাশনাল চিলড্রেন’স টাস্ক ফোর্সে (এনসিটিএফ) সাথে কাজ করছে ইয়ুথ ভলান্টিয়ার হিসাবে প্লান ইন্টারন্যশনাল বাংলাদেশের হয়ে। কাজের অংশ হিসাবে বরিশাল, ভোলা, ঝালকাঠী জেলার এনসিটিএফ কার্যক্রমে সহযোগিতা করছে সজীব। অন্যদিকে আগস্ট, ২০১৩  ‘Planned Parenthood Federation South Asia Regional Office (IPPF SARO)’ এর আয়োজনে বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতি (এফপিএবি) এর সহযোগিতায় ৫ দিনের ইয়ুথ কনসালটেশন প্রশিক্ষণে ব্যাংকক যান তিনি। প্রশিক্ষণে সজীব যুব সাংবাদিক হিসাবে ৫ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধি দলে অংশগ্রহণ করে। এছাড়া এফপিএবি এর যুব সংসদের স্পিকার হিসাবে দায়িত্ব পালন করছে সজীব। । পড়াশুনা শেষ করে একজন বড় মাপের সাংবাদিক হতে চান সজীব এবং সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে যাচ্ছেন। পরিবারে ৭ বোন ও ৩ ভাইয়ের মধ্যে সজীব সবচেয়ে ছোট কিন্তু ছোট হলেও তার দায়িত্বটা ছিলো অনেক বড়। ২০০৬ সালে বাবার মৃত্যুর পর অনেক ভেঙে পড়েছিল সজীব নিজের পড়াশুনা খরচ নিজেই জোগানো কষ্টকর ছিল তার জন্য।

যারা তাকে সহযোগিতা করেছিল সেই সময়ে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে ভোলেনি সজীব। এই তালিকায় আছেন জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা পঙ্কজ রায় চৌধুরী, সম্পাদক মীর মনিরুজ্জামান, সেভ দ্য চিলড্রেনের সুলতান মাহমুদ, মীর রেজাউল করিম, আবু জাফর, প্লান-ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের ফারুক আলম খান এফপিএবি হেলী রফিকসহ সবাই।

সজীব জানায় বাংলাদেশের শিশুদের নিয়ে ভাবনা খুবই কম মানুষ করে, আমি চাই দেশের সর্বস্তরের শিশুদের নিয়ে বাংলাদেশের পরিবর্তন করতে। যেখানে একটি শিশু তার অধিকার বঞ্চিত থাকবেনা কারণ শিশুরা শুধু ভবিষ্যৎ নয়, তারা বর্তমানও। সজীবের ঝুলিতে আছে, জাতীয় ও স্থানীয় প্রতিযোগিতার মোট ৩৮ সনদপত্র, ক্রেস্ট, বইসহ নানা পুরস্কার। সজীব বলেন “একটি মোমবাতি যেমন সারা বিশ্বকে আলোকিত করতে পারে, তেমনি একটি শিশু একটি বিশ্বকে পরিবর্তন করে দিতে পারে। সব শিশুকে সঙ্গে নিয়ে বদলে দেবো এই পৃথিবীকে। আজকে আমি যা হয়েছি আমার সংগঠন এনসিটিএফ এর মাধ্যমে”। আরো বলেন, “স্বপ্ন দেখি বাংলাদেশের কোন ব্যক্তি হয়তো বা একদিন জাতিসংঘের মহাসচিব হিসাবে দায়িত্ব পালন করবে”। সজীব এখন চায় বর্তমান বিশ্বকে তরুনদের মাধ্যমে পরিবর্তন করতে আর যারা দায়িত্ব প্রাপ্ত ব্যক্তি তাদের কে সার্বিক ভাবে সহযোগিতা করার পাশাপাশি তরুনদের নিয়ে জাতিসংঘে যাতে একটি বিশ্ব শান্তি ও তরুন নেতৃত্বে অংশ গ্রহন ভিত্তিক একটি অধিবেশন ব্যবস্থা করা যায় তার জন্য বাংলাদেশে তরুনদের পক্ষ হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন । বাংলাদেশের তরুনদের বিশ্বের কাছে রোল মডেল হিসাবে চিহিৃত করতে চায়। আর কোন শিশু অনাহারে থাকবেনা, থাকবেনা পথে।। গত ২১-২৪ শে নভেম্বর ২০১৪ অনুষ্ঠিতব্য সার্ক পিপলস্ সামিটে যুব সাংবাদিক হিসাবে নেপালে একটি কর্ম শালায় অংশগ্রহন করে। যেখানে বাংলাদেশের শিশু ও তরুনদের এমডিজি লক্ষ্যমাত্রা পূরনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান ও কর্ম পরিকল্পনা তুলে ধরেন। যা আগামী বাংলাদেশে তরুনদের অংশ গ্রহনের সুযোগ ও বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের তরুনদের অবস্থান  তুলে ধরা হয়। [গত ২১-২৪ শে নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য সার্ক পিপলস্ সামিটে যুব সাংবাদিক হিসাবে নেপালে একটি কর্ম শালায় অংশগ্রহন করে। যেখানে বাংলাদেশের শিশু ও তরুনদের এমডিজি লক্ষ্যমাত্রা পূরনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান ও কর্ম পরিকল্পনা তুলে ধরেন।] যা আগামী বাংলাদেশে তরুনদের অংশ গ্রহনের সুযোগ ও বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের তরুনদের অবস্থান তুলে ধরা হয়। বাংলাদেশ সরকারকে শিশুদের উন্নয়নের জন্য সংসদে হয়তো বা একটি বিশেষ অধিবেশন ব্যবস্থা করতে হবে আর সাংবাদিক হিসাবে তা লেখনীর মাধ্যমে উপস্থাপন করবেন তিনি এই আবেদন জানিয়ে যাচ্ছেন সজীব।

পাশাপাশি সজীব মনে করেন, এনসিটিএফ এর ইয়ুথ ভলান্টিয়ার হিসেবে, নিজে যেমন সচেতন হয়েছে এবং প্লান ইন্টারন্যাশনাল এর বিভিন্ন সহযোগিতা প্রশিক্ষণ, বাংলাদেশের শিশু ও তরুণদের অবস্থান তুলে ধরতে সহযোগিতা করেছে। যা বিশ্বকে বাংলাদেশের শিশু কিশোররা পিছিয়ে না পড়ে। সজীব বড় হয়ে বিবিসি ওয়ার্ল্ডের সাংবাদিকতা করার ইচ্ছা সজীবের।

বর্তমানে সজীব ইয়ূথ ভয়েস নামে একটি তরুণদের নিয়ে সংগঠন এর মাধ্যমে পিছিয়ে পড়া তরুণদের অধিকার, বিশ্বে সমমূল্যায়ন, সমান অংশগ্রহণের, উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করছে, তার ইয়ূথ ভয়েসের মূল শ্লেগান, তরুণদের জন্য ভালোবাসা। আর ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে বিশ্বের যুব বান্ধব দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া। বিশ্বের কাছে তুলে ধরা, বাংলাদেশের তরুণরা সুযোগ পেলে অনেক ভূমিকা রাখতে পারে বিশ্বকে এগিয়ে নিতে, ২০২১ সালে বাংলাদেশ হবে বেকার মুক্ত দেশ। বিশ্ব শান্তির, রোল মডেল হতে পারে আমাদের বাংলাদেশ। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের বেকারত্বকে যাদুঘরে পাঠানো হবে। এখন সজীবের ইয়ূথ ভয়েস মূল লক্ষ্য। আর বাংলাদেশই হবে বিশ্ব শান্তির যোগ্য উদাহরণ।বাংলাদেশকে জঙ্গি মৌলবাদ, মাদকমুক্ত নিজ দেশ গড়া। স্বপ্নওয়ালা এই মানুষটি, এখন স্বপ্ন ফেরি করে বেড়ায় তাইতো এখন সে স্বপ্নের ফেরিওয়ালা’।

­

শসা বিক্রি করে কেমনে ইজ্ঞিনিয়ার হমু….!!

মুসাব্বির হোসেন(কুষ্টিয়া): গরীব বা ধনী হোক সবারই স্বপ্ন আছে । স্বপ্ন কখনো জাতি ভেদে হয় না । আর সবারই স্বপ্ন দেখার অধিকার আছে । যে বয়সে লেখা পড়ার কথা ঠিক সে বয়সে আমাদের দেশে অনেক শিশুই তার পরিবারের জন্য জিবীকা নির্বাহ করার জন্য বিভিন্ন শ্রমে নিয়োজিত হয় ।

শ্রম যে রকমই হোক তারা চাই দুবেলা খেয়ে বাঁচতে । এইতো এনসিটিএফ এর খুলনা বিভাগীয় পর্যায়ে আইসিটি এন্ড ডকুমেন্টেশন ট্রেনিং থেকে ফেরার পথে ট্রেনে এই ধরনের এক শিশুর সাথে কথা হয় । দূর থেকে শোনা যায় “খিরা লইবেন খিরা” । শিশুটির নাম নাজমুল (১০) । খুলানার দৌলতপুরে রেলিগেট এলাকায় থাকে ।

নাজমুলকে স্কুলে যাওয়ার কথা জিজ্ঞাসা করলে বলে সে তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ে । তার কাছ থেকে খিরা বিক্রির কারণ জানতে চাইলে বলে স্কুলে যামু কি দিয়া । যাইতে অটো ভাড়া লাগে তাই এই ব্যাবসা করি । প্রতিদিন আমার এই খিরা বেইচা লাভ হয় ১৫০-২৫০ টাকার মত । এই লাভের টাকা দিয়ে  শিশুটি করে জানতে চাইলে বলে লাভের টাকা দিয়া স্কুলে যাই আর “মা”রে বাকি টাকা দিই । আর ঐ টাকা দিয়ে মা ঈদে জামা কপড় কিন্না দেয় ।

বড় হয়ে নাজমুল কি হতে চায় নাজমুলের কাছে জানতে চাইলে “আমি ইজ্ঞিনিয়ার হমু । গাড়ি বানামু” কিন্তু শসা বিক্রি করে কি ইজ্ঞিনিয়ার হওয়া যায় ? এই প্রশ্নের উত্তরে বলা হয় তোমাকে যদি কেউ লেখা পড়ার খরচ দেয় তাহলে কি তুমি পড়বে ? প্রতি উত্তরে শিশুটি বলে “কে দেবে আমার লেখা পড়ার খরচ” ।

আমাদের দেশে আমাদের সমাজে অনেক শিশুই আছে যারা লেখা পড়া করতে চায় দেখে অনেক বড় বড় স্বপ্ন কিন্তু আর্থিক অভাবেই ঐসব ইচ্ছা ঐসব স্বপ্ন স্বপ্নই থেকেই যায় ।