এনসিটিএফ চুয়াডাঙ্গা জেলায় শিশু অধিকার পরিস্থিতি বিষয়ক শিশুদের সাথে বড়দের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের সাথে জেলার শিশু অধিকার পরিস্থিতি বিষয়ক শিশু সংলাপ অনুষ্ঠান অদ্য ২০ শে নভেম্বর জেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে আয়োজন করে এনসিটিএফ চুয়াডাঙ্গা জেলা কমিটি। এনসিটিএফ জেলা সভাপতি আসিব মল্লিক নয়নের সভাপতিত্বে আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের সম্মানিত অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জনাব মনিরা পারভীন মহোদয়। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জনাব  নিখিল রঞ্জন চক্রবর্তী, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, জেলা পরিবার পরিকল্পনা উপ-পরিচালক, জেলা সমাজসেবা উপ-পরিচালক সন্তোষ কুমার নাথ, জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা জনাব আফসানা ফেরদৌসি, এনসিটিএফ এর সাবেক সদস্য তামান্না, জেলা ভলান্টিয়ার সাফফাত, বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষকগণ, সেভ দ্য চিলড্রেনের চাইল্ড রাইটস প্রমোটার মমতাজুল রুমন এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, সাংবাদিক, চুয়াডাঙ্গা জেলা এনসিটিএফ ও স্কুল কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।  চাইল্ড পার্লামেন্ট সদস্য আরিকা এবং সাজের সঞ্চালনায় এনসিটিএফ এর মনিটরিং প্রতিবেদনের সংগৃহিত তথ্যের ভিত্তিতে জেলার  শিশুদের   প্রধান ৪টি ইস্যু যথা শিক্ষা, সুরক্ষা, স্বাস্থ্য এবং বিনোদন বিষয়ে ১২টি  প্রধান উন্নয়নযোগ্য বিষয় এবং তার আলোকে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ অতিথিদের মাঝে সমাধান কল্পে তুলে ধরেন শিশুরা। বিশেষ অতিথি, শিক্ষক ও অন্যান্য সংগঠনের প্রতিনিধিগণ শিশুদের দাবির সাথে একাত্বতা প্রকাশ করে নিজেদের স্থান থেকে সহযোগিতা এবং প্রশাসনকে সমাধান কল্পে ব্যবস্থা নেয়ার আহবান জানান। শিশুদের উত্থাপিত উল্লেখযোগ্য সমস্যা ও সুপারিশ গুলো ছিলো বিদ্যালয়গুলোর কম্পিউটার ল্যাব থাকলেও তার জন্য শিক্ষক, উপকরণ এবং নিয়মিত ক্লাস আয়োজন নিশ্চিত করা, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সচেতনতা ও আইনের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা, জেলায় শিশু পার্ক গুলোতে ক্লাস পালিয়ে শিক্ষার্থীদের অপ্রয়োজনীয় সময় অতিবাহিত বন্ধে প্রশাসনের মনিটরিং বাড়ানো, শারীরিক শিক্ষা ক্লাস ও কৈশোরকালীন স্বাস্থ্য বিষয়ে কাউন্সিলিং করা, বিদ্যালয়ের পরীক্ষা খাতার অবমূল্যায়ন রোধে অন্য স্কুলের শিক্ষক দ্বারা খাতা মূল্যায়ন করা, বিদ্যালয়ে শারীরিক শাস্তি বন্ধে মনিটরিং ও শিক্ষকদের কাউন্সিলিং বাড়ানো, শিক্ষক সংকট দূর করা, বিজ্ঞানাগার সুবিধা নিশ্চিত করা, সাংস্কৃতিক চর্চার জন্য বিদ্যালয়গুলোতে সাপ্তাহিক রুটিনে নির্দিষ্ট ক্লাস অন্তর্ভুক্ত করা, শিশু ধর্ষণ ও নির্যাতন রোধে আইনের সঠিক বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রধান অতিথি সম্মানিত অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মহোদয়  তার বক্তব্যে শিশুদের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি শিশুদের উত্থাপিত সমস্যাগুলোর কিছু কাজ ইতোমধ্যে বাস্তবায়নাধীন তা উল্লেখ করেন এবং বিদ্যালয়গুলোর সার্বিক উন্নয়নযোগ্য বিষয়ে সমাধানে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান। এছাড়াও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করা হয়েছে এবং এর বিরুদ্ধে কঠিন অবস্থান সহ অন্যান্য উন্নয়নযোগ্য দিকগুলো সমাধানে প্রতুশ্রুতি ব্যাক্ত করেন। শিশুদের এমন আয়োজনে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন আগামীতেও পাশে থাকবে এবং শিশুবান্ধব জেলা গঠনে তার দৃঢ় অবস্থান ব্যক্ত করেন। আয়োজনের শেষ পর্বে জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা জনাব আফসানা ফেরদৌসি  এনসিটিএফ ও জেলা প্রশাসনকে তার সমাপনী বক্তব্যে উত্থাপিত শিশুদের সমস্যাগুলো এবং অতিথিদের দেয়া প্রতুশ্রুতিগুলো বাস্তবায়ন করার আকুল আবেদন জানান এবং শিশু সংলাপ আয়োজনের  আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করেন। এনসিটিএফ এর শিশু সংলাপ আয়োজনের সহযোগিতায় ছিলেন জেলা প্রশাসন চুয়াডাঙ্গা জেলা, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি চুয়াডাঙ্গা এবং সেভ দ্য চিলড্রেন। 

কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের সাথে শিশু অধিকার পরিস্থিতি বিষয়ক এনসিটিএফ শিশু সংলাপ অনুষ্ঠিত

কুমিল্লা  জেলা প্রশাসনের সাথে জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদের ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে  জেলার শিশু অধিকার পরিস্থিতি বিষয়ক শিশু সংলাপ অনুষ্ঠান গত ৩১শে অক্টোবর কুমিল্লা জেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে আয়োজন করে এনসিটিএফ কুমিল্লা জেলা কমিটি। এনসিটিএফ জেলা সভাপতি শাহরিয়ার ইমরোজ সুদাদের সভাপতিত্বে আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের সম্মানিত জেলা প্রশাসক জনাব মোঃ আবুল ফজল মীর মহোদয়। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসনের সম্মানিত অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জনাব কাইজার মোহাম্মদ ফারাবী, জেলা শিশু একাডেমি গ্রন্থারিক ইকবাল হোসেন এবং সেভ দ্য চিলড্রেনের চাইল্ড রাইটস প্রমোটার মমতাজুল রুমন এবং কুমিল্লা জেলা এনসিটিএফ ও স্কুল কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।  ইসরাত জাহান রিয়ার সঞ্চালনায় এনসিটিএফ এর মনিটরিং প্রতিবেদনের সংগৃহিত তথ্যের ভিত্তিতে জেলার  শিশুদের   প্রধান ৪টি ইস্যু যথা শিক্ষা, সুরক্ষা, স্বাস্থ্য এবং বিনোদন বিষয়ে ১৩টি  প্রধান উন্নয়নযোগ্য বিষয় এবং তার আলোকে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ অংশগ্রহনকারী শিশুরা অতিথিদের মাঝে সমাধান কল্পে তুলে ধরেন। বিশেষ অতিথি শিশুদের দাবির সাথে একাত্বতা প্রকাশ করে নিজেদের স্থান থেকে সহযোগিতা এবং প্রশাসন থেকে সমাধান কল্পে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস জানান। শিশুদের উত্থাপিত উল্লেখযোগ্য সমস্যা ও সুপারিশ গুলো ছিলো বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বাণিজ্যিক কোচিং এর বৈষম্য দূর করা, বিদ্যালয়গুলোর বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা নেয়া, শিশুদের মাদক থেকে রক্ষা করতে চিহ্নিত স্থানগুলোতে আইনি ব্যবস্থা নেয়া, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সচেতনতা ও আইনের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা, জেলায় শিশু পার্ক ও শিশুদের বিনোদনের স্থানগুলোকে শিশু বান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা ,শিক্ষার্থীদের মানসিক হতাশা দূরকল্পে বিদ্যালয়ে বিশেষ ক্লাস আয়োজন,  বিদ্যালয়গুলোর অবকাঠামোগত উন্নয়ন, কিশোর গ্যাং নির্মূলে ব্যবস্থা গ্রহন, শিশু বা কম বয়স্কদের দ্বারা অটোরিকশা ও সিএনজি চালোনা রোধ করা, ইভটিজিং বন্ধে ব্যবস্থা নেয়া, প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষার্থীদের বইয়ের বোঝা কমানোয় ব্যবস্থা নেয়া সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রধান অতিথি সম্মানিত জেলা প্রশাসক  মহোদয়  তার বক্তব্যে শিশুদের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি শিশুদের উত্থাপিত সমস্যাগুলোর কিছু কাজ ইতোমধ্যে বাস্তবায়নাধীন তা উল্লেখ করেন এবং বাণিজ্যিক কোচিং বন্ধে তড়িৎ ব্যবস্থা নিবেন। এছাড়াও কিশোর গ্যাং ও রাজনৈতিক কাজে শিশুদের ব্যবহার বন্ধে অভিযান চলমান রয়েছে বলে তিনি জানান। মাদক, ইভটিজিং, বাল্যবিবাহ, প্রতিরোধ করা হয়েছে এবং এর বিরুদ্ধে কঠিন অবস্থান সহ অন্যান্য উন্নয়নযোগ্য দিকগুলো সমাধানে প্রতুশ্রুতি ব্যাক্ত করেন। শিশুদের এমন আয়োজনে কুমিল্লা জেলা প্রশাসন আগামীতেও পাশে থাকবে এবং শিশুবান্ধব জেলা গঠনে তার দৃঢ় অবস্থান ব্যক্ত করেন। তিমি খুব শীঘ্রই জেলা প্রশাসন এর সম্পূর্ণ আর্থিক সহযোগিতায় আবারো শিশুদের এমন সুন্দর আয়োজন করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। শিশুদের সংলাপ আয়োজনের শেষ পর্বে কুমিল্লা জেলা এনসিটিএফ সহ-সভাপতি পুষ্পা চক্রবর্তী জেলা প্রশাসনকে তার সমাপনী বক্তব্যে উত্থাপিত এনসিটিএফ শিশুদের সমস্যাগুলো এবং অতিথিদের দেয়া প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়ন করার আকুল আবেদন জানিয়ে শিশু সংলাপ আয়োজনের  আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করেন।