শিশুদের প্রতি সহিংসতা বন্ধ ও শিশুদের সুরক্ষার দাবিতে মানববন্ধন

শিশুদের প্রতি সহিংসতা বন্ধ ও শিশুদের সুরক্ষার দাবিতে মানববন্ধন করেছে চাইল্ড রাইটস অ্যাডভোকেসি কোয়ালিশন ইন বাংলাদেশ। রোববার সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে ১০টি এনজিও থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিভিন্ন স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রী ও সাধারণ মানুষ অংশ নেন। সেখানে শিশুনির্যাতনের বিরুদ্ধে অনেকেই বক্তব্য রাখেন।

মানববন্ধনে শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে প্লান ইন্টার‌ন্যাশনালের ট্রেইনিং ম্যানেজার সৈয়দা হুসনে কাদেরি বলেন, ‘শিশু নির্যাতনকারী কখনো কি ভাবেন, যে শিশুকে নির্যাতন করা হচ্ছে তার কেমন লাগে? তার নিজেরওতো শিশু আছে, নির্যাতিত শিশুর স্থানে নিজের শিশুকে রেখে কল্পনা করে দেখুন কেমন লাগে। তা ছাড়া নির্যাতিত শিশুকেও জিজ্ঞেস করা দরকার তার কেমন লাগে। কি ভীষণ কষ্টের অনুভূতি হয় তার। সারাজীবন শিশুটি সেই ভয়াবহ স্মৃতি নিয়ে বেড়ে ওঠে, বেঁচে থাকে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা চাই প্রতিটি শিশুর নিরাপত্তা দেওয়া হোক। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের একটিই চাওয়া, যেন শিশু নির্যাতনকারীদের অন্তত একজনের হলেও কঠিন বিচার হোক। সেই বিচার দেখে শিশু নির্যাতনকারীরা ভয় পাবেন। তারা জানবেন, এই দেশে শিশু নির্যাতন বরদাস্ত করা হয় না।’

সেভ দ্যা চিলড্রেনের প্রজেক্ট ম্যানেজার মামুনুর রশিদ বলেন, ‘আমরা দেখছি, সমাজের প্রতিটি পর্যায়ে বিভিন্ন জনের মাধ্যমে বিভিন্নভাবে শিশুরা প্রতিনিয়ত নির্যাতিত হচ্ছে। শিশুদের অধিকার লংঘিত হচ্ছে, অনিরাপত্তা আর অনিশ্চয়তায় বেড়ে উঠছে শিশুরা। কোথাও শিশুগৃহকর্মী নির্যাতন, কোথাও শ্রমজীবী শিশুর নির্যাতন ও হত্যা করা হচ্ছে। এসব ঘটনায় আমাদের ঘৃণা প্রকাশের ভাষা নেই।’

ন্যাশনাল চিলড্রেন টাস্কফোর্সের ইয়ুথ ভলেন্টিয়ার আহসান হাবীব বলেন, ‘আমরা এনসিটিএফ এর পক্ষ থেকে সারাদেশে শিশুদের নিয়ে কাজ করে থাকি। সারাদেশে শিশুদের নিয়ে কাজ করতে গিয়ে আমরা দেখতে পাই শিশুরা নানা পাশবিকতা, বিভৎস ও হিংসাত্বক ঘটনার শিকার হচ্ছে। আমরা এমনটা চাই না। শিশুদের জন্য দেশের সব স্থান নিরাপদ হয়ে উঠুক এটাই আমাদের চাওয়া।

এ সময় শিশু নির্যাতন বন্ধে বেশ কিছু দাবি তুলে ধরেন বক্তারা। তা হলো, শিশুর প্রতি সহিংসতা বন্ধে প্রতিটি এলাকায় শিশু সুরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করা। শিশু নির্যাতনের শাস্তি সম্পর্কে সবাইকে অবহিত করা। ঘটনা ঘটার সাথে সাথ দ্রুত আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করা। দ্রুত বিচারের মাধ্যমে শিশু হত্যা ও নির্যাতন সংক্রান্ত মামলা গুলো নিষ্পত্তি করা। কেন এ ধরনের ঘটনা ঘটছে তার সামাজিক এবং প্রাতিষ্ঠানিক কারণসমূহ চিহ্নিত করা। নারী ও শিশু মন্ত্রনালয়ের অধীনে একটি মনিটরিং সেল গঠন করা।

মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন- প্লান ইন্টারন্যাশনালের চাইল্ড অ্যাডভোকেসি স্পেশালিস্ট শাহনাজ, এডুকো থেকে মতলুর রশিদ, ওয়ার্ল্ড ভিশন থেকে ইছহাক মিয়া, মহিলা পরিষদ থেকে নাজমা, সুজন থেকে বদরুল আলম প্রমুখ।